বাংলাদেশের ইতিহাসে ৭ মার্চ একটি অবিস্মরণীয় দিন। এই দিনটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিখ্যাত ভাষণ স্বাধীনতার বীজমন্ত্র হিসেবে কাজ করে। জাতির পিতার এই ভাষণ, যা সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণা জোগায়, ছিল বাঙালির ইতিহাসে একটি নতুন যুগের সূচনা। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) এর সভাপতি আ স ম আবদুর রব সম্প্রতি এদিনের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য তুলে ধরেছেন, এবং ৭ মার্চের মহিমাকে খর্ব না করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিনের ভাষণ শুধুমাত্র একটি বক্তৃতা ছিল না, বরং এটি ছিল বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষার একটি চূড়ান্ত প্রকাশ। ১১০০ বছরের পরাধীনতার শিকল ভেঙে বাঙালির স্বাধীনতার পথ তৈরির জন্য বঙ্গবন্ধুর আহ্বান ছিল একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”— এই উক্তি দ্বারা তিনি পুরো জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করেছিলেন।
আ স ম আবদুর রব বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ ছিল বাঙালির হাজার বছরের দুঃখ-বেদনার এক চিত্র। এটি গণমানুষের অভিপ্রায়ের একটি চরম অভিব্যক্তি, যা সমগ্র জাতিকে উদ্দীপ্ত করে তুলেছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে, সাধারণ মানুষ মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, যা তাদের ঐতিহ্যবাহী সংগ্রামের সাথে যুক্ত হয়েছিল।
এটি একমাত্র ৭ মার্চের ভাষণ নয়, বরং এটি একটি বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে ঘটনার ধারা। স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন, ৩ মার্চের ইশতেহার পাঠ, ৭ মার্চের ভাষণ এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ— সবকিছু এক সূত্রে গাঁথা। মুক্তিযুদ্ধের সময়, এসব ঘটনা ছিল বাঙালির শ্রেষ্ঠ অর্জনের মধ্যে অন্যতম। তাই, এই অর্জনের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা এবং অসামান্য বীরত্বকে অস্বীকার করা যাবে না।
রব আরও উল্লেখ করেছেন যে, ৭ মার্চের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনুধাবন করতে ব্যর্থ হলে সেটি হবে আত্মঘাতী। একটি ঐতিহাসিক দিন হিসেবে ৭ মার্চের গুরুত্ব অস্বীকার করা দেশের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, বর্তমান প্রজন্মের সাথে পূর্ব প্রজন্মের বীরদের অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে একটি নতুন প্রজাতন্ত্র নির্মাণের জন্য প্রস্তুত হতে হবে।
অতএব, ৭ মার্চের ভাষণ শুধু একটি বক্তৃতা ছিল না, বরং এটি ছিল বাঙালির আত্মনির্ভরশীলতার এবং স্বাধীনতার চেতনার একটি সশক্ত উদাহরণ। এই দিনটি বাঙালির জাতীয় জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, যা আগামী প্রজন্মের জন্য একটি অনুপ্রেরণা হিসেবে থাকবে।