ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের নারীমূর্তির মাথায় কালো হিজাব ঢেকে দেওয়ার একটি ঘটনা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে ভাস্কর্যের উপর কালো কাপড় দিয়ে হিজাবের মতো করে ঢেকে দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে কয়েকজন সচেতন নাগরিক সেই কাপড় সরিয়ে ফেলেন। তবে ঘটনাটি কারা ঘটিয়েছে এবং কেন এই কাজ করা হয়েছে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।
ঘটনাটি প্রথমবার নজরে আসে যখন ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি লিটন নন্দী ও তার সঙ্গীরা ভাস্কর্যের কাছে গিয়ে কাপড়টি সরিয়ে ফেলেন। তিনি জানান, ‘এটা একটি উদ্দেশ্যমূলক কাজ হতে পারে, এবং অপরাধীদের চিহ্নিত করতে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’ লিটন নন্দী আরও বলেন, এই ধরনের কাজ শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যকে আঘাতই করে না, বরং এটি সমাজের উদার চিন্তা ও স্বাধীনতার উপরও প্রভাব ফেলে।
এ ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম সক্রিয় হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ ঘটনাস্থলে সহকারী প্রক্টর মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ও মো. রবিউল ইসলামকে পাঠান। তাঁরা রাত ১টার দিকে ভাস্কর্য এলাকা পরিদর্শন করেন। সহকারী প্রক্টর মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে গিয়ে দেখি, কাপড় নামিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে এই কাপড় কে বা কারা পরিয়েছে, তা এখনো জানা যায়নি। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তরফ থেকে এ ঘটনায় দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ জানান, ‘আমরা আজকের মধ্যেই তিন থেকে চারজন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করব এবং বিভিন্ন এজেন্সির সহায়তায় ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত করব। এ ধরনের কার্যকলাপ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
এই ঘটনা নিয়ে সাধারণ ছাত্র ও শিক্ষকদের মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। রাজু ভাস্কর্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক প্রতীক। সেই ভাস্কর্যের সঙ্গে এমন একটি কাজ যে উদ্দেশ্যমূলক, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে।