সম্প্রতি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং যানজট সমস্যার কারণে দেশের সাধারণ মানুষের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এই অসন্তোষের প্রেক্ষিতে জনগণ যে কোনো সময় রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই বক্তব্য রাখেন। সভাটি আয়োজন করে বৃহত্তর মিরপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে না আনা যায় এবং যানজট সমস্যা সমাধান না করা হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের ধৈর্য্যচ্যুতি হবে। যদি দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকে, মানুষ এই সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসতে বাধ্য হবে।”
এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি সরকারের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি প্রদান করেন এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। তাঁর মতে, জনগণ প্রতিনিয়ত খাদ্য ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক দামে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে। বাজারে গিয়ে যখন সাধারণ মানুষ পণ্য কিনতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছে, তখন সরকারের ওপর আস্থা হারাচ্ছে।
ফ্যাসিবাদের চক্রান্ত এবং জনগণের বঞ্চনা
হাসনাত আবদুল্লাহ জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিকে ফ্যাসিবাদের একটি সুপরিকল্পিত চক্রান্ত বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি উল্লেখ করেন, “যখন বাজারে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায় এবং রাস্তায় যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়, তখন জনগণের মনে অনিচ্ছাসত্ত্বেও এই ধারণা জন্মায় যে আগের সময় ভালো ছিল।”
তিনি আরও বলেন, দেশের বিচারব্যবস্থা, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এবং অন্যান্য ফ্যাসিবাদী কার্যকলাপের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে নিপীড়িত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এতে জনগণের প্রতিদিনের জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ফ্যাসিবাদমুক্ত সমাজ গড়তে হলে প্রথমেই এই ধরণের ষড়যন্ত্রের অবসান ঘটাতে হবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অবস্থান
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আন্দোলনের অন্যান্য নেতারাও তাঁদের অবস্থান পরিষ্কার করেন। সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম বলেন, “ফ্যাসিবাদ বিলোপের লড়াই শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব।” তিনি এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। আরেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের ৫ আগস্টের পর আন্দোলনকারীদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং যানজট সমস্যার বিরুদ্ধে জনগণের অসন্তোষ দিন দিন বাড়ছে। যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তবে পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। জনগণের স্বার্থে সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, নাহলে অস্থিরতা এবং গণআন্দোলনের আশঙ্কা দিন দিন বাড়বে।