বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা সংস্কারের প্রস্তাবের প্রচার অভিযানে নামার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। দলের নেতাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে বুধবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীনসহ বিভিন্ন স্তরের নেতারা অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির তিন সদস্য এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নেতারা প্রশিক্ষণ দেন।
দলটির সূত্র মতে, রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা নিয়ে প্রচার কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর জন্য ছোট পুস্তিকা এবং দফাভিত্তিক প্রচার কার্ড তৈরি করা হয়েছে, যা মাঠে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো হবে। এই প্রচার অভিযানে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে নেতাদের পারদর্শী করে তুলতে প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।
এই কর্মশালায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বিশেষ করে রাষ্ট্র সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরেন। ৩১ দফা প্রস্তাবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হলো—সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন, ‘রেইনবো নেশন’ প্রতিষ্ঠা, নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রীকে দায়িত্ব পালনের নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণের কথাও উল্লেখ রয়েছে।
বিএনপি দাবি করছে, তাদের ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবে আইন সভায় উচ্চকক্ষের প্রবর্তন, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার এবং বিচার বিভাগের পুনর্গঠনসহ আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। দফাগুলো বাস্তবায়নের জন্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক শক্তির জয়লাভ অপরিহার্য বলে বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী নেতারা বলেন, জনগণের হাতে রাষ্ট্রের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হলে ঐকমত্যের জাতীয় সরকার গঠন অপরিহার্য। ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই ৩১ দফা প্রস্তাব জাতির সামনে তুলে ধরেন। দলটি বলেছে, এই প্রস্তাবটি দেশের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ঘোষিত ১৯ দফা এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ২৭ দফা কর্মসূচির আলোকে তৈরি করা হয়েছে।
বিএনপির এই প্রচেষ্টা রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি নতুন মাত্রা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে যদি তারা সফলভাবে ৩১ দফা কার্যকর করতে পারে। ৩১ দফার মাধ্যমে দেশ ও জনগণের স্বার্থে যে পরিবর্তন আসবে, তা আগামী নির্বাচনের ফলাফলেও প্রভাব ফেলবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।