রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বাসায় ডাকাতির ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তবে তাদের মধ্যে পাঁচজনকে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখনও লুকোচুরি করছে। গত শুক্রবার রাতে ব্যবসায়ী আবু বকরের বাসায় সংঘটিত এই ডাকাতির পর থেকে ঘটনাটি আরও বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। পুলিশ ও বাসার অন্য বাসিন্দাদের তথ্যমতে, ডাকাতেরা যৌথ বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে ঢুকে নগদ ৭৫ লাখ টাকা ও ৭০ ভরি সোনা লুট করে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌস জানিয়েছেন, মোট আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে সাতজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে, একাধিক সূত্র জানায়, এই ডাকাতিতে জড়িত কমপক্ষে ২০ জনের নাম পাওয়া গেছে, এবং এর মধ্যে র্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনীর বর্তমান ও সাবেক সদস্যরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
দলবদ্ধভাবে ডাকাতির এই ঘটনায় তদন্তের কাজ চলছে, যা র্যাব ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে পরিচালনা করছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোন মন্তব্য করা হয়নি। তবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন মুখপাত্র জানান, ডাকাতির ঘটনায় বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের নাম উঠে এসেছে। এর ফলে সমাজে আতঙ্ক এবং অপরাধমূলক কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জানা গেছে, ডাকাতেরা সাধারণত মাইক্রোবাস ও ছোট কাভার্ড ভ্যান ব্যবহার করে এবং পুলিশের পোশাক পরিধান করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করে। তারা ওয়াকিটকি এবং ভারী অস্ত্র ব্যবহার করে নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করে। আবু বকর, যিনি জমি ও ইট-বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তিনি এই ঘটনার পর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
ডাকাতির ঘটনার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুরো বিষয়টিকে অত্যন্ত গোপনে তদন্ত করছে। ডিবি কর্মকর্তাদের মতে, তারা বর্তমানে সেই ব্যক্তিকে খুঁজছেন, যার মাধ্যমে ডাকাতির পর চুরি করা অর্থ ও স্বর্ণালংকার ভাগাভাগি হয়েছে। অপরাধ চক্রে জড়িত বেসামরিক লোকদের গ্রেপ্তার করতে তারা পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
এই ঘটনার মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অনেকেই মনে করছেন, যৌথ বাহিনীর পরিচয়ে ডাকাতির এই ঘটনা সমাজের নিরাপত্তার জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি সমাজে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি।