আন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ শনিবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছেন, যা দেশের রাজনৈতিক সংস্কারের প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এ দফায় আলোচনায় অংশ নেবে গণফোরাম, এলডিপি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দল, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, লেবার পার্টি এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)।
৫ অক্টোবর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ চলছে, তবে পূজার ছুটির কারণে সব দলের সঙ্গে আলোচনা শেষ হয়নি। মূলত ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। গত দফার আলোচনায় জাতীয় পার্টি উপস্থিত থাকলেও এই দফায় দলটি এখনও আলোচনায় ডাকা হয়নি।
নতুন দফার সংলাপের প্রথম পর্ব শুরু হয়েছিল বিএনপির সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়। এরপর একের পর এক রাজনৈতিক দল, যেমন জামায়াতে ইসলামী, গণতন্ত্র মঞ্চ, হেফাজতে ইসলাম, বাম গণতান্ত্রিক জোট, ইসলামী আন্দোলন, এবি পার্টি এবং গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়।
ড. ইউনূস ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে একটি ভাষণে রাজনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে ছয়টি কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেছিলেন। এই কমিশনগুলোর লক্ষ্য নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান এবং দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কার করা। এই ঘোষণার পর সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করে, যা দ্রুত কার্যকর হয়।
সম্প্রতি, সরকার স্বাস্থ্য, গণমাধ্যম, শ্রমিক অধিকার এবং নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠনের ঘোষণা দিয়েছে, যা দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এই সংলাপের মাধ্যমে সরকার আশা করছে যে দেশের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে একটি সুসংহত ও যৌক্তিক রূপরেখা তৈরি হবে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে এসব আলোচনা দেশের রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়াকে নতুন দিগন্তে নিয়ে যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন।
এখন দেখা যাক, এই সংলাপের ফলাফল কেমন আসে এবং দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কি ধরনের পরিবর্তন আনে। রাজনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য এই সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, যা দেশের জনগণের জন্য একটি সঠিক ও উন্নত ভবিষ্যতের আশা জাগায়।