রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দের বিরুদ্ধে পিএইচডি ডিগ্রি জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে, যা তিনি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন। অধ্যাপক চন্দ বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগের মাধ্যমে তাঁর সুনামহানি করার চেষ্টা করা হচ্ছে, এবং এ বিষয়ে তিনি আইনগত পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।
গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মোর্শেদুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলেন। তিনি দাবি করেন, অধ্যাপক চন্দ যে ডিগ্রি ধারণ করেন, তা আসলে পিএইচডি নয় বরং একটি ডিপ্লোমা ডিগ্রি। একই সঙ্গে মোর্শেদুল ইসলাম অভিযোগ করেন যে, অধ্যাপক চন্দ প্রায় ১১ মাস বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই বিদেশে অবস্থান করেছেন এবং এ সময়ে বেতন–ভাতা নিয়েছেন।
অধ্যাপক মোর্শেদুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরে লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছেন, যেখানে অধ্যাপক চন্দের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। এই ঘটনার পর, সংবাদমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়, বিশেষ করে প্রথম আলো অনলাইনে এই নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
আজ রবিবার অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ এই প্রতিবেদনটির প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং নিজের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, “লন্ডনের সোয়াস (School of Oriental and African Studies, University of London) থেকে অর্জিত আমার ডিগ্রি কোনো ডিপ্লোমা নয়, এটি একটি বৈধ পিএইচডি ডিগ্রি।” তিনি তাঁর পিএইচডি ডিগ্রির প্রত্যয়নপত্রও প্রথম আলোকে পাঠিয়েছেন, যদিও সেটির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
বিশ্বজিৎ চন্দ আরও দাবি করেন যে, তাঁর ছুটির বিষয়টিও পুরোপুরি নিয়মমাফিক হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট কর্তৃক অনুমোদিত ছিল। তিনি জানান, চার বছর ১১ মাস ২৮ দিনের জন্য বিনা বেতনে বিশেষ ছুটি নিয়েছিলেন এবং এই সময়কালে তিনি কোনো বেতন–ভাতা গ্রহণ করেননি। এছাড়া, তাঁর পদোন্নতির প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি এবং সমস্ত প্রমাণ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে রয়েছে।
অধ্যাপক চন্দের মতে, ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এই অভিযোগ করা হয়েছে, যা মানহানিকর। তিনি জানান, তিনি আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।