লক্ষ্মীপুরে ২০১৩ সালের একটি হত্যা চেষ্টা ও গুলির ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার জেলার বিএনপির সদস্যসচিব সাহাব উদ্দিনের পক্ষ থেকে এই মামলা করা হয়। ১০ বছর ১০ মাস ৪ দিন পর এই মামলাটি জমা দেয়ার পেছনে রয়েছে দীর্ঘ সময়ের হতাশা ও প্রতীক্ষা।
এ ঘটনায় সাহাব উদ্দিনের অভিযোগ, ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর তার বাড়িতে র্যাবের একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে। ওই সময়ে তিনি পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকা যুবলীগ নেতা সালাহ উদ্দিনের কারণে তিনি সফল হননি। র্যাবের কর্মকর্তারা তাকে মারধর করে এবং তার পায়ে গুলি করে। আহত অবস্থায় তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে তিনি পরবর্তীতে পালিয়ে গিয়ে প্রাণে রক্ষা পান।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, একইদিনে জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ এবং বিএনপির কর্মী মাহবুব ও শিহাবকে হত্যা করা হয়। বাদীর দাবি, ওই হামলা পরিচালিত হয়েছিল শেখ হাসিনার নির্দেশে। এ ঘটনা দেশটির রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসেবে মনে করা হচ্ছে, যা রাজনৈতিক সহিংসতা এবং প্রশাসনের অপব্যবহারের উল্কাপাতকে তুলে ধরে।
বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিন বলেন, “আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্য ছিল, কিন্তু সেই দিন আমি প্রাণে বাঁচতে পেরেছি। আগে মামলা করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোন সহযোগিতা পাইনি। তবে এখন পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়েছে, তাই মামলা করতে সক্ষম হয়েছি।”
মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। এই মামলাটি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আলোচনা এবং বিতর্কের সৃষ্টি করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মামলার প্রেক্ষাপটে বিষয়টি বিচার বিভাগের সামনে রাখা হয়েছে, যেখানে আদালতের বিচারক আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান মামলাটি গ্রহণ করেছেন এবং থানায় নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। এটি দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে অভিহিত করা হচ্ছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা এবং অভিব্যক্তি অব্যাহত রয়েছে, যা রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।