ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরীকে রাজধানীর বনানীর ডিওএইচএস এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছেন। এই গ্রেপ্তারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার রবিউল হোসেন ভূঁইয়া, যিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়েছে।
এই ঘটনাটি ঘটে ঠিক তখন, যখন শমসের মবিন চৌধুরী হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফেরত আসেন। বুধবার দুপুরে তিনি এবং তার স্ত্রী থাইল্যান্ডে যাওয়ার জন্য থাই এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটের অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু বিমানবন্দরে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও তাঁদের বিদেশে যেতে দেওয়া হয়নি। এই ঘটনার পর চৌধুরী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় উল্লেখ করেন যে, তাঁর স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য তাঁদের বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল।
শমসের মবিন চৌধুরী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তবে ২০১৫ সালে তিনি দলের সব পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এর পর তিনি ২০১৮ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারা বাংলাদেশে যোগদান করেন। রাজনৈতিক দুনিয়ার এই গতিবিধি অনেকটাই চোখে পড়ে, কারণ এটি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা তৈরি করছে।
এর আগে, গত ৭ জানুয়ারি, ২০২৩ সালের জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে শমসের মবিন চৌধুরী তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তৃণমূল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত নাজমুল হুদার পর চৌধুরী দলের নেতৃত্বে আসেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, গত জাতীয় নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন তৃণমূল বিএনপিকে নিবন্ধন দিয়েছে, যা দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে নতুন মাত্রা প্রদান করেছে।
দলটির ভবিষ্যৎ এবং শমসের মবিন চৌধুরীর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে এখন নানা ধরনের আলোচনা চলছে। বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে যে, এই গ্রেপ্তারির পর দলের সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা দলের ঐক্য এবং কার্যক্রমকে দুর্বল করতে পারে। পাশাপাশি, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা এখন দেখার বিষয়।
এদিকে, শমসের মবিন চৌধুরীর গ্রেপ্তার রাজনীতির মাঠে নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে, যা দেশের রাজনৈতিক ভূবিষতিতে নতুন টানাপোড়েন সৃষ্টি করতে পারে। বর্তমানে দেশজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং বিরোধী দলের নেতাদের ওপর দমন-পীড়নের ঘটনাগুলি দেশের গণতন্ত্রের জন্য উদ্বেগজনক অবস্থার সৃষ্টি করছে।
শমসের মবিন চৌধুরীর গ্রেপ্তার এবং তার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আগ্রহী রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং সাংবাদিকরা বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন, কেননা এটি দেশের রাজনৈতিক চিত্রে প্রভাব ফেলবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।