বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকার মিরপুর টেস্ট শুরু হতে যাচ্ছে দুই দিন পর। কিন্তু টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচটি ঘিরে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা এবং উত্তেজনা। বাংলাদেশের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। দুই দলের ক্রিকেটপ্রেমীরা যখন টেস্টের উত্তাপ অনুভব করতে প্রস্তুত, ঠিক তখনই সাকিবের অনুপস্থিতি নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
সাকিবের না ফেরা এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রশ্ন
সাকিব আল হাসান মিরপুর টেস্টের জন্য বাংলাদেশের স্কোয়াডে ছিলেন। তবে, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে দেশে ফেরার সময় নিরাপত্তাজনিত কারণে সাকিবকে দেশে না ফেরার পরামর্শ দেওয়া হয়। যদিও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সাকিবের ফেরা নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি, দক্ষিণ আফ্রিকা দলও বিষয়টি নিয়ে ছিল ধোঁয়াশায়। প্রোটিয়া শিবিরে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছিল, “সাকিব কি ফিরবেন?”
দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সদস্য ও কর্মকর্তারা ঢাকায় এসে এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সাকিবের না ফেরার বিষয়টি প্রোটিয়াদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করে। বিষয়টি আরও জটিল করে তুলেছিল স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো খবর।
পরিস্থিতির মোড়: হাসান মুরাদের অভিষেকের সুযোগ
আজ অবশেষে এই ধোঁয়াশা দূর হয়েছে। বিসিবি সাকিবের পরিবর্তে তরুণ বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদকে দলে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সাকিবের অনুপস্থিতিতে তাঁর অভিষেক হতে পারে মিরপুরের মাটিতে। বিসিবির এই সিদ্ধান্ত সাকিবকে কেন্দ্র করে চলা অনিশ্চয়তা অবসান ঘটালেও ভক্তদের জন্য এটি কিছুটা হতাশাজনক খবর। অনেকেই সাকিবের খেলা দেখার আশায় ছিলেন, বিশেষ করে তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ হিসেবে অনেকেই মিরপুর টেস্টকে দেখছিলেন।
নিরাপত্তা ইস্যু ও সাকিবের ভবিষ্যৎ
সাকিবের না ফেরার পেছনে মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে মিরপুর স্টেডিয়ামের সামনে ছাত্র-জনতার একটি দলের প্রতিবাদ। তারা সাকিবকে দল থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানায় এবং এমনকি খেলার দিন কঠোর কর্মসূচি নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয়। ফলে, নিরাপত্তা শঙ্কার কথা বিবেচনা করে সাকিবের ফেরা স্থগিত করা হয়।
এর আগে ভারত সফরের সময় টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন সাকিব। সেই ঘোষণা অনুযায়ী, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট ছিল তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—কানপুরের টেস্টই কি তাঁর শেষ টেস্ট হয়ে থাকবে, নাকি মিরপুরে তিনি আবারও ফিরবেন?
বাংলাদেশের স্কোয়াড ও নতুন সম্ভাবনা
সাকিবের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব থাকবে নাজমুল হোসেনের কাঁধে। দলের স্কোয়াডে বেশ কিছু তরুণ ও অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছেন, যারা সাকিবের অভাব পূরণে নিজ নিজ জায়গা থেকে সেরাটা দিতে প্রস্তুত।
মিরপুর টেস্টের স্কোয়াডে রয়েছেন সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান, জাকির হাসান, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদসহ আরও অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড়।