রাজধানীর মিরপুরে গতকাল সোমবার গভীর রাতে সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হককে (ব্যারিস্টার সুমন) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ব্যারিস্টার সুমন মিরপুরের ৬ নম্বর এলাকায় তাঁর বোনের বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে মিরপুর ও আদাবর থানায় দুটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, যেগুলোর ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ব্যারিস্টার সুমনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর মধ্যে দুটি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ প্রমাণিত হতে পারে। তদন্তে উঠে আসা প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁকে দীর্ঘদিন ধরেই খুঁজছিল। অবশেষে রাত দেড়টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাঁকে আটক করা হয়।
ব্যারিস্টার সুমন নিজেও গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। রাত দেড়টার কিছু পর তিনি তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়ে বলেন, “আমি পুলিশের সাথে যাচ্ছি। দেখা হবে আদালতে। দোয়া করবেন সবাই।” এই সংক্ষিপ্ত পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হয়, এবং এটি সুমনের সমর্থক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
ব্যারিস্টার সুমন ছিলেন হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনের সংসদ সদস্য। তিনি শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বর্তমান সরকার পতনের পর, সরকারে সংশ্লিষ্ট একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এ প্রেক্ষাপটে সাবেক বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৭৫ জনের বেশি ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছেন, যার মধ্যে ব্যারিস্টার সুমনের নাম উল্লেখযোগ্য।
প্রসঙ্গত, ব্যারিস্টার সুমন একজন বিশিষ্ট আইনজীবী এবং সামাজিকভাবে সচেতন ব্যক্তিত্ব হিসেবেও পরিচিত। তাঁর গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে আলোচনার ঝড় উঠেছে।