সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের ৪ নভেম্বর সংবিধান ও ঐতিহাসিক ৭ মার্চের জাতীয় দিবস বাতিলের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটি মনে করে, এই সিদ্ধান্ত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ইতিহাস ও জাতীয় ঐতিহ্যের পরিপন্থী এবং কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বৃহস্পতিবার সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স এক যৌথ বিবৃতিতে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাঁরা উল্লেখ করেন, “মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং এর গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোকে অস্বীকার করা জাতির জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক। ৭ মার্চের জাতীয় দিবসের গুরুত্ব অস্বীকার করা শুধু মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করা নয়, বরং জাতীয় ঐক্য ও সত্ত্বার বিরুদ্ধে একটি আঘাত।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করলাম, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়া। এমনকি উপদেষ্টাদের মধ্যে কিছু ব্যক্তির বক্তব্য মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের ঐতিহাসিক বিষয়গুলো নিয়ে বিতর্কিত, যা আমাদের জন্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।”
অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব ও পরিধি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকায় এ ধরনের বিতর্কিত সিদ্ধান্তগুলো দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হতে পারে বলে সিপিবি মনে করে। দলটি আরও দাবি করে, “এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার আগে অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান জানানো উচিত।”
বিবৃতিতে সিপিবি নেতারা বিচার বিভাগসহ দেশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতে গ্রহণযোগ্য নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানান। তাঁরা মনে করেন, এসব ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট নীতিমালা ছাড়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে এবং তা জাতীয় স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
সিপিবি নেতারা উল্লেখ করেন যে, কোন ‘মব’ বা বিশৃঙ্খল জনতার চাপে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাঁরা অন্তর্বর্তী সরকারকে তাদের কার্যক্রমকে সুনির্দিষ্ট পরিসরে সীমাবদ্ধ রেখে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।