বাংলাদেশের সফটওয়্যার ও তথ্য সেবা খাতের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) বর্তমানে একটি সংকটময় পরিস্থিতির মুখোমুখি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতা করার কারণে বেসিসের সব নির্বাহী সদস্যের পদত্যাগের দাবি তুলেছে বেসিস সংস্কার পরিষদ। এই দাবির পক্ষে তাদের আন্দোলনের প্রেক্ষাপট এবং লক্ষ্য পরিষ্কার করতে আজ জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বেসিস সংস্কার পরিষদের সদস্যরা। তারা অভিযোগ করেন, গত বছরগুলোর বেসিস নির্বাচন ছিল স্বচ্ছতার অভাবে কলঙ্কিত এবং বিতর্কিত। তারা বলেন, নির্বাচনের পূর্বে অবৈধভাবে প্রক্সি ভোটার তৈরি করা হয়েছিল এবং বৈধ সদস্যদের ভোট দেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। এ কারণে গত নির্বাচনে ২ হাজার ৬০০ সদস্যের মধ্যে মাত্র ৯০০ জন ভোট দিতে পেরেছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইনফোবান রেল্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফৌজিয়া নিগার সুলতানা। তিনি বলেন, “বেসিসের নির্বাচনে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে ভিন্নমতের সদস্যদের ভোট দিতে বাধা দেওয়া হয়। পদপ্রাপ্ত সদস্যদের বেশিরভাগই সরকারের মদদপুষ্ট ছিলেন, যারা সংগঠনের কোষাগার থেকে অর্থ ব্যয় করে নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত ছিলেন।”
এরপর সংস্কার পরিষদ আট দফা দাবি পেশ করে। দাবি গুলো হলো: বর্তমান নির্বাহী কমিটির সদস্যদের পদত্যাগ, ভুয়া সদস্যদের বাতিল, সদস্যপদ নবায়ন এবং প্রেসিডেন্ট ফোরাম নামক স্বেচ্ছাচারী প্ল্যাটফর্মের অবসান। তারা আরও বলেন, বেসিসের গঠনতন্ত্র পুনর্গঠন করে বৈষম্য দূর করতে হবে এবং নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করতে হবে।
এখন প্রশ্ন হলো, বেসিসের সদস্যরা কীভাবে তাদের স্বার্থ রক্ষা করবেন এবং এই সংকট থেকে বের হওয়ার উপায় কী? সংস্কার পরিষদের সদস্যরা আশা করছেন, তাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়া হলে বেসিসের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাবে এবং সকল সদস্যের মধ্যে সমতা প্রতিষ্ঠিত হবে।
এছাড়া, সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংস্কার কমিটির ছয় সদস্য, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন এইচ আর সফট বিডির প্রধান নির্বাহী পরিচালক এ এইচ এম রোকমুনুর জামান, নিউরো সফট টেকনোলজিসের পরিচালক মো. মিজানুর রাহমান, ড্রিম টেক বিডির পরিচালক মো. জসীম উদ্দিন নিজামী, ওএস আইটি সলিউশনস লিমিটেডের পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান, ম্যাটিওরস ডটকমের প্রধান নির্বাহী পরিচালক মো. মোস্তাইন বিল্লাহ এবং বাংলা পাজেল লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী মো. আবদুল মজিদ।
এমন অবস্থায় বেসিসের বর্তমান পরিস্থিতি এবং সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব কিভাবে নিরসন হবে তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে সব পক্ষ।