বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে বিএনপির একটি নতুন দাবি। তারা অভিযোগ করেছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার পতনের প্রাক্কালে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) ও সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে নিয়োগ প্রদানের মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করছে। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ এই অভিযোগ তুলে ধরেন।
সালাহ উদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, সরকার বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে, তিনি একটি বিশ্বস্ত সূত্র থেকে খবর পেয়েছেন যে, আওয়ামী লীগ পুলিশ প্রশাসনে নিজেদের আধিপত্য বাড়ানোর লক্ষ্যে ৮০৩ জন সাব-ইন্সপেক্টর এবং ৬৭ জন সহকারী পুলিশ সুপার নিয়োগ দিয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, এসব নিয়োগে গোপালগঞ্জের ২০০ জন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ৪০৩ জন ছাত্রলীগের সদস্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
তিনি বলেন, “দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কলঙ্কমুক্ত রাখতে আমাদের দাবি, অবিলম্বে এসব নিয়োগ বাতিল করা হোক। বর্তমান সরকারের নীল নকশার আওতায় যে ৬৭ জন এএসপি নিয়োগ পেয়েছে, তারা সবাই ছাত্রলীগের ক্যাডার। এদের নিয়োগ দিলে আগামীতে তারা হবে ফ্যাসিবাদের নতুন রূপ।”
সালাহ উদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেন, এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সাধারণ ধর্মীয় সংখ্যার সমতার নীতিকে চরমভাবে লঙ্ঘন করেছে। তিনি বলেন, “সারদায় প্রশিক্ষণরত এই দলীয় সাব-ইন্সপেক্টরদের পাসিং আউট আগামী ৩১ অক্টোবর হবে। যদি তাদের নিয়োগ বন্ধ করা না হয়, তাহলে তাদের মধ্য থেকেই সৃষ্টি হবে নতুন ফ্যাসিবাদের দোসর।”
এই বিষয়টি আরও গভীরতর হয়ে উঠেছে কারণ বিএনপি মনে করে, এই নিয়োগের মাধ্যমে সরকার তাদের ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য একটি রাজনৈতিক অস্ত্র তৈরি করতে চাচ্ছে। বিএনপি নেতা আরও সতর্ক করেছেন, “এদের নিয়োগ দিলে পতিত ফ্যাসিবাদ পুনরুত্থানের পথ খুলে যাবে। আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে হবে।”
সাম্প্রতিক এই ঘটনাগুলো বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংঘাতের পরিবেশকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। বিএনপির এই অভিযোগের প্রেক্ষাপটে সরকার পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো এখন সময়ের ব্যাপার। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতি দেশের স্থিতিশীলতার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।