পাকিস্তানের মাটিতে দীর্ঘ সাড়ে তিন বছরের টেস্ট জয়হীন খরা কাটল মুলতানে। নোমান আলীর অসাধারণ বোলিং নৈপুণ্যে ইংল্যান্ডকে ১৫২ রানের ব্যবধানে পরাজিত করে ঘরের মাঠে টানা সাত টেস্টের পর প্রথমবারের মতো জয় উদযাপন করল পাকিস্তান। এই জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে সমতা এনেছে পাকিস্তান, যা তাদের জন্য ছিল বহু প্রতীক্ষিত ও সম্মানের মুহূর্ত।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২৯৭ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ড থেমেছে মাত্র ১৪৪ রানে। পাকিস্তানের বাঁহাতি স্পিনার নোমান আলী নিজের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন, দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ উইকেটসহ মোট ১১ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। এর ফলে শুধু জয়ই নয়, টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের হারানো আত্মবিশ্বাসও ফিরে এসেছে।
নোমানের বোলিং জাদু
মুলতানের স্পিন সহায়ক উইকেট চতুর্থ দিনের সকালে ইংল্যান্ডের জন্য ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই ওলি পোপকে সাজিদ খান আউট করে পাকিস্তানের জয়যাত্রার সূচনা করেন। এরপর থেকে বাকি ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের একাই দমিয়ে রেখেছিলেন নোমান আলী। তিনি ধারাবাহিকভাবে সঠিক লাইন ও লেংথে বল করে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থ হতে বাধ্য করেছেন।
ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকস ছিলেন দলের প্রধান ভরসা, যিনি সুইপ–রিভার্স সুইপের কৌশল অবলম্বন করে ৩৬ বলে ৩৭ রান করেন। কিন্তু নোমানকে আক্রমণ করতে গিয়ে স্টাম্পড হয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন তিনি। এরপর ব্রাইডন কার্স কিছুটা লড়াই করার চেষ্টা করলেও, তার ২৭ রানের ইনিংসও শেষ হয় নোমানের বলেই। ইংল্যান্ডের শেষ আট উইকেটের মধ্যে সাতটিই ছিল নোমানের শিকার, যার ফলে মাত্র ৩৩.৩ ওভারে ইংল্যান্ডের ইনিংস গুটিয়ে যায়।
সিরিজে সমতা
পাকিস্তান এই টেস্টে ব্যাট হাতে ভালো শুরু করেছিল। প্রথম ইনিংসে ৩৬৬ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ২২১ রানে অলআউট হয় তারা। তবে বোলারদের নৈপুণ্যে ম্যাচটি পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকে যায়। বিশেষ করে নোমানের অসাধারণ বোলিং পারফরম্যান্সের ফলে ইংল্যান্ডের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপও কোনো জবাব দিতে পারেনি।
এই জয় পাকিস্তানের জন্য শুধু একটি টেস্ট ম্যাচ জয়ের চেয়েও বেশি কিছু। ঘরের মাঠে দীর্ঘদিন পর টেস্ট জয়ের পাশাপাশি সিরিজে সমতা আনাটা ছিল তাদের জন্য একটি বড় সাফল্য।