আজ সোমবার সকালে ঢাকার বায়ুমান অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিশ্বের ১২১টি শহরের মধ্যে, এদিন সকাল সাড়ে আটটার দিকে বায়ুদূষণের মাত্রা অনুযায়ী ঢাকা পঞ্চম অবস্থানে ছিল। আইকিউএয়ারের বাতাসের মান সূচকে (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স – AQI) ঢাকার স্কোর ছিল ১৬৬, যা “অস্বাস্থ্যকর” হিসেবে বিবেচিত হয়। গতকাল রোববার এই সময় ঢাকার AQI স্কোর ছিল ১৫৪ এবং শহরটি অষ্টম স্থানে ছিল।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার নিয়মিতভাবে বিশ্বের বিভিন্ন শহরের বায়ুদূষণের অবস্থা তুলে ধরে। তারা সরবরাহকৃত লাইভ সূচকের মাধ্যমে জনসাধারণকে জানায়, কোন শহরের বায়ু কতটা নির্মল বা দূষিত। এই তথ্য মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ দূষিত বাতাস অনেক রোগের কারণ হতে পারে। আজকের AQI সূচকের শীর্ষস্থানে ছিল পাকিস্তানের লাহোর, যার স্কোর ছিল ৩০৮। দিল্লি ২৬১ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল।
আইকিউএয়ারের স্কেল অনুযায়ী, ৫১ থেকে ১০০ স্কোরের মধ্যে বায়ুমানকে মাঝারি বা গ্রহণযোগ্য ধরা হয়। তবে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরের বায়ু সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এই গোষ্ঠীর মধ্যে আছেন বৃদ্ধ, শিশু, অসুস্থ এবং অন্তঃসত্ত্বা নারী। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা সাধারণ মানুষের জন্যও অস্বাস্থ্যকর হিসেবে ধরা হয়। ২০১ থেকে ৩০০ পর্যন্ত স্কোরকে অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০১ থেকে তার ওপরে থাকলে তা বিপর্যয়কর বলে বিবেচনা করা হয়।
ঢাকা ও এর আশেপাশের অঞ্চলগুলোর মধ্যে আজ দূষণ পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ ছিল আইসিডিডিআরবি, ঢাকার মার্কিন দূতাবাস ও হেমায়েতপুরে, যেখানে স্কোর যথাক্রমে ২০৭, ১৯৪ ও ১৯৪ ছিল। এই এলাকাগুলোর বায়ুমান অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় রয়েছে, যা সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য আরও বেশি ক্ষতিকর।
ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উপাদান হলো পিএম ২.৫ নামে পরিচিত অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনুযায়ী, আজকের দিনে ঢাকার বায়ুতে পিএম ২.৫-এর মাত্রা ডব্লিউএইচও নির্ধারিত মানমাত্রার চেয়ে ১৬ শতাংশ বেশি ছিল। এই ক্ষুদ্র কণাগুলো ফুসফুসে প্রবেশ করে শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা তৈরি করতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং অন্যান্য জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
এ পরিস্থিতিতে আইকিউএয়ার জনগণকে সতর্ক করে দিয়েছে, বাইরের পরিবেশে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়াও, বাইরে ব্যায়াম করা এড়িয়ে চলা এবং ঘরের জানালা বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।