ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র এবং ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল মোস্তাক আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ১৫ কোটি ১১ লাখ ৪২ হাজার টাকার একটি সরকারি প্রকল্পের অর্থ অপচয় ও আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এ মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ।
দুদকের উপপরিচালক এবং জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম আজ বুধবার সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। মোস্তাক আহমেদ ছিলেন ওই প্রকল্পের সহকারী প্রকল্প পরিচালক। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘পোস্ট-ই-সেন্টার ফর রুরাল কমিউনিটি’ নামক প্রকল্পের আওতায় ১৫ কোটি ১১ লাখ ৪২ হাজার টাকায় ৫০০টি এইচপি সার্ভার এবং ইউপিএসসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক সামগ্রী ক্রয় করা হয়। এগুলো ডাক বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ডাকঘরে বিতরণ করা হলেও প্রকল্পের কার্যক্রমে নানা অনিয়ম এবং অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায়।
একটি সরকারি তদন্ত কমিটি, যা গঠিত হয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীনে, এ দুর্নীতি তদন্ত করে জানায় যে, প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জুনে শেষ হয়, কিন্তু সরবরাহ করা যন্ত্রপাতিগুলো যথাসময়ে বিভিন্ন ডাকঘরে পৌঁছানো হয়নি। অনেক সরঞ্জাম প্রকল্পের দুই বছর পর পর্যন্ত পৌঁছায়নি। এছাড়া, এসব যন্ত্রপাতি কীভাবে ব্যবহার করা হবে, সেই বিষয়ে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও কোনো প্রশিক্ষণ আয়োজন করা হয়নি। ফলে এসব সরঞ্জাম বছরের পর বছর অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকে।
তদন্ত প্রতিবেদনে সুধাংশু শেখর ভদ্র এবং মোস্তাক আহমেদের বিরুদ্ধে সরাসরি অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণ মিলেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ‘সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের’ অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদক সূত্রে আরও জানা গেছে, আজ বুধবার ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল মোস্তাক আহমেদকে ঢাকার সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে, সুধাংশু শেখর ভদ্রকে ২০২০ সালে দুর্নীতি ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল।